Search

Tuesday, December 20, 2016

কৈলাস শিখরে অবস্থান করছিলেন দেবদীদেব মহাদেব

২।
একদিন হিমালয়ের কৈলাস শিখরে অবস্থান করছিলেন দেবদীদেব মহাদেব এবং জগজ্জননী পার্বতী। জগজ্জননী পার্বতী মহাদেবকে প্রশ্ন করলেন---
হে জগন্নাথ, জগৎপতি, নরলোকে কি করে সম্ভোগ (কাম/যৌনকলা/সেক্স) প্রবর্তিত হলো সে কথা শ্রবণ করবার জন্য আমার একান্ত বাসনা হচ্ছে।
প্রকৃতপক্ষে জগজ্জননী এবিষয়ে অজ্ঞ তা কিন্তু নয়, তাঁর শ্রবনের মধ্য দিয়ে নরলোককে শেখানোর জন্যই তিনি এমন প্রশ্নের অবতারনা করেন।
এ বিষয়ে সংস্কৃত শাস্ত্রের শ্লোকটি নিম্নরুপঃ
কৈলাসশিখরে রম্য সিদ্ধচারণসেবিতে।
শঙ্করং পরিপ্রপচ্ছ গৌরী প্রকৃতিরীশ্বরী।।
কথং মনষ্যলোকহস্মিন সম্ভোগঃ সম্প্রবর্ত্ততে।
তদ্বদম্ব জগন্নাথ তদধীনাস্মি সর্ব্বথা।।
হে দেবাদিদেব, তুমি সুপণ্ডিত, সর্বশাস্ত্রে অতি বিচক্ষন। এই তিন ভুবনে তোমার অজ্ঞাত কিছু নেই। রতিশাস্ত্র অতি গুহ্য, বিচিত্র শাস্ত্র, এর মধ্যে যে সব গুপ্ত তথ্যাদি আছে তা জানবার জন্য আমার বড়ই কৌতুহল হয়েছে।
নরনারী ভেদ, কিরুপ পুরুষের সংগে কেমন নারীর মিলন হয়, সেসব লক্ষণ বলুন। বিবাহের শুভাশুভ লক্ষন, কি কারনে পুত্র, কন্যা বা নপংসক জন্মে, কেউ অল্পদিনে মারা যায়, কেউ দূর্বল, কেউবা সবল হয় কেন? কেন জীব দশ মাস দশ দিন জঠর আগারে বসবাস করে, কি কারনে নারী জাতী পতিব্রতা বা ব্যাভিচারীনী হয়? কেউ ধার্মিক, কেউ অধার্মিক হয় এসব কারন শুনবার ইচ্ছা আমার হয়েছে।
জগজ্জননী পার্বতীর এহেন প্রশ্ন শুনে মহাদেব অতীব আনন্দানুভব করলেন। ধীর শান্তভাবে তিনি বলতে লাগলেন--
হে গিরিনন্দিনী- তুমি জগজ্জননী আদীমাতা জগতের সকল কিছু তোমার মায়াতে আচ্ছন্ন। কিন্তু দেবী তুমি সেই মহামায়ায় বিমোহিত হয়ে যাবতীয় পূর্বকথা সম্পূর্ণ বিস্মৃত হচ্ছ এটি অত্যান্ত আশ্চর্যের বিষয়। শাস্ত্রীয় শ্লোকঃ
ত্বমদ্যা জগত্যাং মাতা মায়ৈব তব কেবলং
তয়ৈব মোহিতা তং হি চিত্তমেতৎ নগাত্মজে।।
মহাদেব পার্বতীকে সমস্ত প্রাচীন কথা স্মরন করতে বললেন।
সমগ্র বিশ্বজগতের মাতা পরমা প্রকৃতি পার্বতী। তিনিই অখণ্ড অনন্তঃ সংসারের মুল শক্তি। সমগ্র বিশ্বজগৎ তাঁর থেকেই উদ্ভুত। সুতরাং তিনি চাইলে ক্রমান্বয়ে সকল পূর্বস্মৃতি স্মরন করতে পারেন।
(চলমান থাকবে নং ২)

No comments:

Post a Comment