Search

Tuesday, December 20, 2016

শ্লোকঃ

৩।
পূর্বের পোস্টের শ্লোকঃ
ত্বমাদ্যা জহত্যাং মাতা মায়ৈব তব কেবলং।
তয়ৈব মোহিতা ত্বং হি চিত্তমেতৎ নাগাত্মজে।।
মহাদেব মহামায়া পার্বতীকে পূর্ব কথা স্মরন করতে বললেন।
সমগ্র বিশ্বব্রক্ষ্মান্ডের মাতা পরমা প্রকৃতি পার্বতী। তিনিই অখন্ড অনন্ত সংসারের মুল শক্তি। সমগ্র বিশ্বজগৎ তাঁর থেকেই উদ্ভুত। তাই এ বিষয়ে সমস্ত কথাই পার্বতী ইচ্ছা করলে স্মরন করতে পারবেন।
মহাদেব তাই বললেনঃ
হে মহাদেবী কৈলাস শিখরে তোমার সংগে বিহারকালে যে সব ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল সেইসব মনোরম পূর্বকথা স্মরন কর। সমগ্র পৃথিবী যখন প্রলয়পয়োধিজলে নিমগ্ন ছিল সেই কালে আমি তোমারই সংগে কৈলাস শিখরে বিরাজিত ছিলাম।
তিনি বললেন প্রিয়ে সে কালে তুমি বিহার বাসনা প্রকাশ করেছিলে আমি তাই তোমার সংগে ক্রীড়া করেছিলাম। কিন্ত আমি উর্দ্ধরেতা হয়ে অবস্থান করতাম। এই প্রকারে তোমার সাথে বিহার করতে থাকলেও তোমার তাতে তৃপ্তি সঞ্চার হলোনা। তুমি তোমার বিরক্তি প্রকাশ না করায় আমি তা বুঝতে পারিনি। কিন্তু তুমি আমার প্রতি কুপিতা হয়ে আমার সামনে হতে অন্তর্হিতা হলে। তোমার সেই আকস্মিক প্রস্থানের কারন আমি ভালভাবে বুঝতে পারলামনা তাই অত্যান্ত ব্যাকুল চিত্ত হয়ে উঠলাম।
ব্যাকুল চিত্তে চঞ্চলভাবে নানাদিকে ভ্রমন করে ক্লান্ত ও হতাশ হয়ে উপবেশন করতে বাধ্য হলাম এবং দিব্য স্তব ও প্রার্থনা করতে লাগলাম। স্তব প্রভাবে তুমি সহাস্য বদনে দেখা দিলে। তখন আমি আমার আত্মাকে সার্থক জ্ঞান করতে লাগলাম।
পার্বতী মহাদেবকে খুশি করবার জন্য পুনরায় বিহারের অভিলাষ প্রকাশ করলেন। মহাদেব তাঁর ইচ্ছা পূর্ণ করলেন। এভাবে সুদীর্ঘ দ্বাদশ বর্ষ পরম সুখে ক্রীড়া করলেন।
এভাবে মহাদে পার্বতীকে পূর্বকথা স্মরন করাতে গিয়ে বললেন, আমি বুঝতে পারলাম তুমি আমার সাথে বিহারে পরিতৃপ্ত হতে পারছনা। তোমাকে বলেছিলাম, হে দেবী আমি নিস্কাম যোগী, অর্থাৎ আমি নিস্কামভাবে তোমার সাথে সম্ভোগক্রীড়া করছিলাম।
সেসময় তুমি তোমার মনের ইচ্ছা পূর্ন রুপে আমার কাছে প্রকাশ করলে আমি বুঝতে পারলাম নিস্কাম ভাবে তোমার সংগে সম্ভোগ বিহার করলে তুমি পরিতৃপ্ত হতে পারবেনা।
তাই সে সময় মহাদেব পার্বতীর চিত্তবিনোদনের জন্য নিজের দেহ থেকে কাম ও রতির সৃষ্টি করলেন। এর পর মহাদেব পার্বতীর মনোরঞ্জনে তাঁর সাথে কামভাবে রতি বিহার করলেন।
মহাদেবের দক্ষিন অঙ্গ থেকে কামের এবং বাম অঙ্গ থেকে সুন্দরী কামবীনোদিনী রতির সৃষ্টি হলো।
তখন থেকেই ক্রমে নর নারী প্রভৃতি নানা জীবের সৃষ্টি শুরু হতে লাগল।
নিস্কামোহহং পরং যোগী তৃপ্তির্ণ জায়তে তব।
অবচঞ্চ মহাদেবী কথং কুপ্যসি পার্বতী।।
প্রীত্যর্থং তব দেবেশি সৃজামি মদনং রতিং।
ক্রীড়ামি কামভাবেন প্রজাং সৃজামি চ ক্রমাৎ।।
ইত্যুক্ত্যা দেবদেবেশো দক্ষাঙ্গাৎ কামমসৃজৎ।।
বামচ্চ সুন্দরিং দেবীং রতিং রতিবিনোদিনীং।।
পার্বতীও রতিপরায়না হয়ে মহাদেবের সংগে বিহারে পরিতৃপ্ত হতে লাগলেন একই সাথে আনন্দ ও জীব সৃষ্টি চলতে থাকল।
এটি রতিশাস্ত্র অনুযায়ী জীব সৃষ্টির মূল কথা। তার পর থেকেই জগৎসংসারে নর নারীতে সমাকীর্ণ হয়ে উঠল।
(চলমান ৩)

No comments:

Post a Comment